Monday 21 June 2021

উত্তর অয়ণান্ত বা উত্তরায়ন বা উত্তর অয়নান্ত ( summer solistics)দিবস

উত্তর অয়ণান্ত বা উত্তরায়ন বা উত্তর অয়নান্ত ( summer solistics)দিবস

বন্ধুরা ! ২১ জুন ছিল উত্তর অয়ণান্ত বা উত্তরায়ন বা উত্তর অয়নান্ত ( summer solistics)দিবস। ২১ জুন, উত্তর গোলার্ধের সবচেয়ে বড় দিন। বছরের এ দীর্ঘতম দিনে বাংলাদেশের আকাশে সূর্য থাকবে মোট ১৩ ঘন্টা৩৬ মিনিট এক সেকেন্ড।
২১জনু সূর্য একটি নির্দিষ্ট সময়ে কর্কটক্রান্তি রেখার ওপর লম্বাভাবে অবস্থান করে। কর্কটক্রান্তি রেখা বা এর অংশ বাংলাদেশের মধ্যভাগ দিয়ে অতিক্রম করেছে। এই দিনে সূর্য তার উত্তরায়নের সর্বোচ্চ বিন্দুতে অবস্থান করে। কর্কট রেখায় বা সাড়ে ৩২ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশে সূর্যকে মধ্যাহ্নে আকাশের ঠিক মাঝখানে দেখা যায়। বাংলাদেশের মধ্যাংশ দিয়ে কর্কটক্রান্তি রেখা যাওয়ার ফলে বাংলাদেশের প্রায় সবখানেই মধ্যাহ্নে সূর্য ছিল প্রায় মাথার ওপর। ওই সময় কোনো লাঠি ভূমির সঙ্গে লম্বভাবে রাখলে তার কোনো ছায়া পড়েনি । ঢাকার আকাশে ২১ জুন বেলা ১২টায় সূর্য মধ্যগগন থেকে মাত্র ০.৩ কৌণিক ডিগ্রি দূরে ছিল, তাই ঢাকাতেও ওই সময়ে কোনো লম্ব দণ্ডের ছায়া প্রায় পরেনি বলা যায়। ২১ জুন হলো হলো উত্তরায়ন বা উত্তর অয়নান্ত বা সামার সলস্টিস বা গরম কালের মধ্য ভাগ । ২১ জুন সবচেয়ে ছোট রাত ও দিন সবচেয়ে বড় থাকে । জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এদিন গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এটি জ্যোতির্বিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । দিবা-রাত্রির দৈর্ঘ্য হ্রাস-বৃদ্ধির উপর নির্ভর করে চারটি দিন গুরুত্বপূর্ণ । এসব দিন নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো : হিসাবের সুবিধার্থে সূর্যকে পরিক্রমণকালে কক্ষপথে পৃথিবীর চারটি অবস্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যথা : ২১শে জুন, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২২শে ডিসেম্বর ও ২১শে মার্চ। ২১শে জুন : সূর্যকে পরিক্রমণকালে ২১শে জুন পৃথিবী এমন অবস্থানে পৌঁছে, যেখানে উত্তর মেরু সূর্যের দিকে ২৩.৫° ঝুঁকে থাকে এবং দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে দূরে সরে পড়ে। এদিন ২৩.৫° উত্তর অক্ষাংশে অর্থাৎ কর্কটক্রান্তির উপর সূর্যকিরণ ৯০° কোণে বা লম্বভাবে পড়ে। ফলে এইদিন উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় এবং রাত সবচেয়ে ছোট হয়। আর দক্ষিণ গোলার্ধে রাত সবচেয়ে বড় এবং দিন সবচেয়ে ছোট হয়। ২৩শে সেপ্টেম্বর : ২১শে জুনের পর উত্তর মেরু সূর্য থেকে দূরে সরতে থাকে এবং দক্ষিণ মেরু নিকটে আসতে থাকে। ফলে উত্তর গোলার্ধে ক্রমশঃ দিন ছোট ও রাত বড় হ’তে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড় ও রাত ছোট থাকে। এভাবে ২৩শে সেপ্টেম্বর পৃথিবী এমন এক অবস্থানে আসে, যখন উভয় মেরু সূর্য থেকে সমান দূরে থাকে। এইদিন সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখায় ৯০° কোণে এবং মেরুদ্বয়ে ০° কোণে আপতিত হয়। ফলে এই তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রি সমান হয়। ২২শে ডিসেম্বর : ২৩শে সেপ্টেম্বরের পর উত্তর মেরু সূর্য থেকে আরও দূরে সরতে থাকে এবং দক্ষিণ মেরু অপেক্ষাকৃত সূর্যের কাছে সরে আসে। ফলে উত্তর গোলার্ধে দিন ছোট হ’তে থাকে এবং রাত বড় হ’তে থাকে। এভাবে ২২শে ডিসেম্বর এমন অবস্থানে পৌঁছায় যখন দক্ষিণ মেরু সূর্যের দিকে সর্বাধিক (২৩.৫° কোণে) হেলে থাকে। এইদিন সূর্যকিরণ ২৩.৫° দক্ষিণ অক্ষাংশে লম্বভাবে বা ৯০° কোণে আপতিত হয়। ফলে এইদিন দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় হয় এবং রাত সবচেয়ে ছোট হয়। একই সাথে উত্তর গোলার্ধে দিন ছোট ও রাত বড় হয়। ২১শে মার্চ : পৃথিবী তার নিজ কক্ষপথে আবর্তন কালে ২২শে ডিসেম্বরের পর উত্তর মেরু ক্রমশঃ সূর্যের নিকটে আসে এবং দক্ষিণ মেরু সরে যেতে থাকে। এতে উত্তর গোলার্ধে দিন বড় ও রাত ছোট হ’তে থাকে। অবশেষে ২১শে মার্চ পৃথিবী এমন অবস্থানে আসে যখন উত্তর মেরু ও দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে সমান দূরত্বে থাকে। ফলে এইদিনও ২৩শে সেপ্টেম্বরের মত পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রি সমান হয়।