Monday 29 January 2018

 ৩১ জানুয়ারী ২০১৮ তারিখ একধারে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, সুপার মুন ও নীল চন্দ্র

৩১ জানুয়ারী ২০১৮ তারিখ একধারে পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, সুপার মুন ও নীল চন্দ্র



৩১ জানুয়ারী ২০১৮  তারিখ একধারে  পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ, সুপার মুন ও নীল চন্দ্র দেখা যাবে ।  পূর্ণগ্রাস চন্দ্রগ্রহণ যুক্তরাষ্ট্রের বড় অংশ উত্তর পূর্ব  ইউরোপ, রাশিয়া, এশিয়া, ভারত মহাসাগর, প্রশান্ত মহাসাগর ও অস্ট্রেলিয়া হতে দেখা যাবে । 

বাংলাদেশের সময় অনুযায়ী
৩১শে জানুয়ারী ২০১৮ বুধবার গ্রহণ শুরু হবে সন্ধ্যা মি. ৩৬ সে.   পূর্ণ গ্রাস সংগঠিত হবে মি. ২৯ সে.  পূর্ণ গ্রহণের স্থায়িত্ব কাল ১মি. ৩২ সে.  গ্রহণ ছেড়ে যাবে ১০ মি. ০৮ সে.

 


পৃথিবী যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য চাঁদ সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবী চাঁদ সূর্য একই সরল রেখায় অবস্থান করে। পৃথিবীপৃষ্ঠের কোন দর্শকের কাছে চাঁদ আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে কিছু সময়ের জন্য অদৃশ্য হয়ে যায়। এই ঘটনাকে চন্দ্রগ্রহণ বলা হয়।



চন্দ্রগ্রহণের সময় সূর্যের আলো পৃথিবীতে বাধা পায় ও  চাঁদ পৃথিবীর ছায়ায় ঢাকা পড়ে যায়। পৃথিবী চাঁদের চেয়ে বড় হওয়ায়, পৃথিবীর ছায়া চন্দ্রপৃষ্ঠকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলে। এই কারণে চন্দ্রগ্রহণ পৃথিবীর কোনো কোনো অংশে পূর্ণগ্রাস হিসাবে দেখা যায়।


এই পূর্ণগ্রাস বা আংশিকগ্রাস পৃথিবীর সকল স্থান থেকে একই রকম দেখা যায়। কিন্তু পৃথিবীর সকল স্থানে কোনো না কোনো সময় পূর্ণ বা আংশিক গ্রহণ দেখা যায়।

 

এ নিয়ে পৃথিবীর নানা প্রান্তে নানা রকম গল্প সৃষ্টি হয়েছে। কালক্রমে তা ধর্মতত্ত্বে পৌরাণিক কাহিনি হিসেবে যুক্ত হয়েছে। যেমন, হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে সমুদ্রমন্থন শেষে উত্থিত অমৃত অসুরদের বঞ্চিত করে দেবতারা পান  করেছিলরাহু (দানব বিশেষদানব বিপ্রচিত্তির ঔরসে ও সিংহিকার গর্ভে এঁর জন্ম হয়) কৌশলে এবং গোপনে অমৃতপান করতে থাকলে, চন্দ্র ও সূর্য এঁকে চিনতে পেরে অন্যান্য দেবতাদের জানিয়ে দেয়এই সময় বিষ্ণু এঁর দুই বাহু মাথা কেটে দেনকিছুটা অমৃত পান করায় এই দানব ছিন্নমস্তক হয়ে অমরত্ব লাভ করেনএঁর মস্তকভাগ রাহু ও দেহভাগ কেতু নামে পরিচিত। 



এরপর থেকে সুযোগ পেলেই রাহু চন্দ্র সূর্যকে গ্রাস করার জন্য অগ্রসর হয়। কিছুটা গ্রাস করতে সক্ষম হলেও তার কর্তিত দেহ থেকে চাঁদ-সূর্য বেরিয়ে আসে। রাহুর এই গ্রাসকালীন সময়ে চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
এসব কথা বিজ্ঞানসম্মত নয় ।



আরো তথ্য : চন্দ্রগ্রহণ পূর্ণিমার সময় এবং সূর্যগ্রহণ অমাব্যত্সার সময় হয় ।


চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণের মাঝে পার্থক্য আছে  ।

চন্দ্রগ্রহণের সময় সূর্য ও চন্দ্রের মাঝে পৃথিবী চলে আসে । ফলে পৃথিবীর ছায়া চন্দ্রে পড়ে এবং চন্দ্র দেখা যায় না ।পূর্ণিমায় চন্দ্রগ্রহণ হয়।

অপরদিকে সূর্যগ্রহণের সময় সূর্য ও পৃথিবীর মাঝে চাঁদ চলে আসে । ফলে সূর্য ঢাকা পড়ে । অমাবস্যায় সূর্যগ্রহণ হয় ।

একই ইংরেজী মাসে দুই বার পূর্ণিমা হলো দ্বিতীয় পূর্ণিমাকে ( নীল চন্দ্র ) Blue Moon বলা হয় । ইংরেজীতে পূর্ণগ্রাস চন্দ্র গ্রহণকে Blood moon (রক্ত চন্দ্র)ও বলা হয় ।

Thursday 18 January 2018

১০ বছরের ছোট্ট মেয়ে আবিস্কার করেছে সুপার নোভা

১০ বছরের ছোট্ট মেয়ে আবিস্কার করেছে সুপার নোভা

বিজ্ঞানী বা জ্যোতির্বিজ্ঞানী হওয়ার জন্য বয়স কোন প্রভাব বিস্তার করে না । বিজ্ঞানী হওয়ার জন্য দরকার পর্যবেক্ষণ, বিশ্লেষণ করার ক্ষমতা ও প্রবল ইচ্ছাশক্তি । এই খবরটি এই কথাকেই প্রমাণ করে । আসা করি সবাই মনযোগ দিয়ে খবরটি পড়বেন ও চেষ্টা করবেন বাড়ির ছোট্ট ছেলে-মেয়েদের বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তোলার ।



সুপারনোভা আবিষ্কার করেছে  কানাডায় ক্যাথরিন নামের ১০ বছরের ছোট্ট মেয়ে।
 



সুপারনোভা হচ্ছে এক ধরনের মহাজাগতিক বিস্ফোরণ। বিস্ফোরণের ফলে একটি নক্ষত্র ধ্বংস হয়ে যায়। এতে  ব্ল্যাক হোল তৈরি হতে পারে, আবার নিউট্রন তারাও তৈরি হতে পারে। যাই হোক না কেন, এটি আসলে মহাকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

 



এটি যে আবিস্কার করেছে তার পুরো নাম : ক্যাথরিন অরোরা গ্রে। তার বাবা পল গ্রে একজন মহাকাশ বিজ্ঞানী। বাবার কাজ দেখে দেখেই কাজ সম্পর্কে একটা আগ্রহ ক্যাথরিনের তৈরি হয়ে গিয়েছিল। পল তার পেশার কারণেই এর আগে তিনটি সুপারনোভা আবিষ্কার করেছিলেন।


কিন্তু তার মেয়ে ক্যাথরিন তাকে পেছনে ফেলে দিয়েছে সুপারনোভা আবিষ্কারের ফলে। পল তার সহকর্মীকে নিয়ে ২০১০ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করছিলেন এবং সেই সঙ্গে তুলে রাখছিলেন একের পর এক ছবি। টেলিস্কোপে তোলা ছবিগুলোর প্রতি ক্যাথরিনের আগ্রহটা ছিল অনেক বেশি। কাজেই যখন পল এবং তার সহকর্মী ডেভিড কাজের জন্য বাইরে বের হয়েছেন সময় ক্যাথরিন তার আগ্রহ থেকেই দেখতে শুরু করে একের পর এক তোলা টেলিস্কোপের ছবিগুলো।


হঠাত্ পরপর দুটো ছবিতে খটকা লাগে ক্যাথরিনের। কারণ দুটি ছবি একই আকাশের দুটি ভিন্ন সময়ে তোলা। কিন্তু প্রথম ছবিতে একটি আলোর বিন্দু দেখা যাচ্ছে, যা পরের ছবিটিতে দেখা যাচ্ছে না। মহাকাশ বিজ্ঞানী বাবার কাছ থেকে তো ছোটবেলা থেকেই এসব খুঁটিনাটি বিষয়গুলোর গল্প ক্যাথরিন শুনেছে। কাজেই তার বুঝতে মোটেও সমস্যা হলো না যে, এটি একটি সুপারনোভা। তারপর আর কি, বাবা বাড়িতে ফেরামাত্র চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে ক্যাথরিন জানিয়ে দিল তার আবিষ্কারের কথা। আর পলও মিলিয়ে দেখলেন যে সত্যিই তার মেয়ে ক্যাথরিন আবিষ্কার করে ফেলেছে একটি নতুন সুপারনোভা।



এরপর আরও সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সব বিজ্ঞানীই একমত হলেন, আসলেই ক্যাথরিন নতুন একটি সুপারনোভা আবিষ্কার করে ফেলেছে। আর এর ফলে ক্যাথরিন বনে গেল পৃথিবীর সবচেয়ে ক্ষুদে সুপারনোভা আবিষ্কারক ও জ্যোতির্বিজ্ঞানী ।




পরে আরও হিসাব করে দেখা গেল, সুপারনোভাটি ক্যাথরিন আবিষ্কার করেছে তার আকার আমাদের সূর্যের সমান। আর পৃথিবী থেকে এর দূরত্বটাও কম নয়। মাত্র ২৪০ মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে আছে সুপারনোভাটি।


মহাবিশ্বে সবসময় সুপারনোভা হতে থাকে। কিন্তু তারা খুব কমই আমাদের চোখে পড়ে। সে রকমই একটি বিরল ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ক্যাথরিন। আবিষ্কার করে ফেলেছে একটি সুপারনোভা।



সূত্র :
 খবরটি প্রকাশের সময় :  মে ২০১১