চাঁদ যখন পরিভ্রমণরত অবস্থায় কিছু সময়ের জন্য পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে এসে পড়ে, তখন পৃথিবীর কোন দর্শকের কাছে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে অদৃশ্য হয়ে যায় কিছু সময়ের জন্য। এই ঘটনাকে সূর্যগ্রহণ বলা হয়।
চাঁদ সূর্যের আংশিক ঢেকে রাখায় সংঘটিত হয় আংশিক সূর্যগ্রহণ।
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ তারিখ আংশিক সূর্যগ্রহণ দক্ষিণ আমেরিকা,প্রশান্ত মহাসাগর, আটলান্টিক আন্টার্টিকা হতে দেখা যাবে। এই দৃশ্যটি প্রথম যে জায়গায় দেখা যাবে তা ১৬ ফেব্রুয়ারি 00:২৫:৫১ থেকে। মধ্যবর্তী পর্যায়ে 0২:২১:২৯ , এরপর ০৪:১৭ মিনিট পর্যন্ত সংগঠিত হবে। ( বাংলাদেশে গ্রহণের তালিকা সম্পর্কে তথ্য : https://www.timeanddate.com/eclipse/in/bangladesh
)
সূর্যগ্রহণের
সময় সূর্য পর্যবেক্ষণের জন্য সান ফিল্টার দিয়ে টেলিস্কোপ ব্যবহার করতে হবে ও খালি চোখে
এক্স –রের অব্যবহৃত নতুন পেপার ব্যবহার করতে হবে । ছোটদের বিশেষ
রোদচশমা দিয়ে সূর্যগ্রহণ দেখাতে হবে । অন্যথায় চোখের অপূরণীয় ক্ষতি হবে ।
সূর্যগ্রহণ
নিয়ে অনেক কুসংস্কার আছে । সেগুলো মানা যাবে
না । যেমন : সন্মানসম্ভা মায়েদের উপোষ থাকা,
সূর্যকে দেবতা মেনে নদীতে নেমে ভিজে থাকা ও সূর্যকে কোন দানব খেয়ে ফেলছে মনে করে সূর্যকে
রক্ষার জন্য আকুতি মিনতি করা, ধাবত বস্তু ব্যবহার
করা হতে বিরত থাকা এবং সাভাবিক কাজ-কর্ম বাদ দিয়ে বৃথা সময় নষ্ট করা ।
চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণ নিয়ে অনেক পৌরাণিক কাহিনি
আছে । যেমন : হিন্দু পৌরাণিক কাহিনি মতে― সমুদ্রমন্থন শেষে উত্থিত অমৃত
অসুরদের বঞ্চিত করে দেবতারা পান করেছিল। রাহু (দানব বিশেষ। দানব বিপ্রচিত্তির ঔরসে ও সিংহিকার গর্ভে এঁর জন্ম হয়) কৌশলে এবং গোপনে অমৃতপান করতে
থাকলে, চন্দ্র ও সূর্য এঁকে চিনতে পেরে অন্যান্য দেবতাদের জানিয়ে দেয়। এই সময় বিষ্ণু এঁর দুই বাহু মাথা কেটে দেন। কিছুটা অমৃত পান করায় এই দানব
ছিন্নমস্তক হয়ে অমরত্ব লাভ করেন। এঁর মস্তকভাগ রাহু ও দেহভাগ কেতু
নামে পরিচিত।
এরপর থেকে সুযোগ পেলেই রাহু
চন্দ্র সূর্যকে গ্রাস করার জন্য অগ্রসর হয়। কিছুটা গ্রাস করতে সক্ষম হলেও তার কর্তিত
দেহ থেকে চাঁদ-সূর্য বেরিয়ে আসে। রাহুর এই গ্রাসকালীন সময়ে চন্দ্র বা সূর্য গ্রহণ
অনুষ্ঠিত হয়।
এসব কথা বিজ্ঞানসম্মত নয় ।
বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষণের বিষয় । সূর্য, চন্দ্র ও শনি ইত্যাদি কোন দেবতা নয়
। এরা মহাকাশের বস্তু মাত্র । রাহু ও কেতু নামে কোন বিষয়ের অস্তিত্ব বিজ্ঞানে নেই
।