Sunday, 22 December 2019

 আজ দক্ষিণ অয়নান্ত দিবস বা December Solastic বা মকর সংক্রান্তি ।

আজ দক্ষিণ অয়নান্ত দিবস বা December Solastic বা মকর সংক্রান্তি ।



আজ দক্ষিণ অয়নান্ত দিবস বা December Solastic বা মকর সংক্রান্তি । আজ দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন  ও সবচেয়ে ছোটতম রাত এবং  উত্তর গোলার্ধে সবচেয়ে ছোট দিন বা সবচেয়ে বড় রাত হবে ।





আজ দক্ষিণ গোলার্ধে সবচেয়ে বড় দিন এবং সবচেয়ে ছোট রাত্রি (১৪ ঘন্টা দিন ১০ ঘন্টা রাত্রি) আর উত্তর গোলার্ধে এর ঠিক বিপরীত অবস্থা। অর্থাৎ, সবচেয়ে ছোট দিন এবং সবচেয়ে বড় রাত্রি হবে। আজ দক্ষিণায়ণের শেষ এবং উত্তরায়নের শুরু। আজকের এই দিনে পৃথিবী তার কক্ষপথে এমনভাবে অবস্থান করে যে মকরক্রান্তি রেখার উপর সূর্যরশ্মি লম্বভাবে পড়ে এবং দক্ষিণ গোলার্ধের বেশি অংশ আলোকিত হয়। ফলে দক্ষিণ গোলার্ধে বৃহত্তম দিন এবং ক্ষুদ্রতম রাত্রি হয়।

২১ ডিসেম্বর বা ২২ ডিসেম্বর সূর্য মকরক্রান্তি রেখা ( ২৩.৪৩৬৮৯° দক্ষিণ অক্ষাংশ )-র ওপর অবস্থান করায় এবং উত্তর মেরু সূর্য থেকে কিছুটা দূরে হেলে থাকায় উত্তর গোলার্ধে দীর্ঘতম রাত্রি ক্ষুদ্রতম দিন হয়ে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থা দেখা যায়।

 
রাতটা দীর্ঘতম হলেও সঙ্গে থাকবে চাঁদ। সারারাতই চাঁদের আলো পৃথিবীকে সঙ্গ দেবে।
দীর্ঘ রাত হওয়ায় কুয়াশা গাছের পাতায় ফোঁটা ফোঁটা পানি জমিয়ে ফেলে। গ্রামবাংলায় প্যাঁচার নানা ধরনের ডাকের সঙ্গে পাতাঝরা পানির টুপ টুপ শব্দ মোহময় করে তুলে।
দীর্ঘতম রাত অথবা হ্রস্বতম দিনকে এভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে-২১ জুন তারিখে উত্তর গোলার্ধে আমরা পাই দীর্ঘতম দিন আর হ্রস্বতম রজনী।
সূর্য সময় কর্কটক্রান্তি বৃত্তে অবস্থান করে। ক্রান্তি বৃত্তে সূর্যের এই প্রান্তিক অবস্থান বিন্দুকে বলা হয় উত্তর অয়নায়ন। দক্ষিণ গোলার্ধে এর বিপরীত অবস্থা।
এর পর থেকে দিন ছোট হতে থাকে আর রাত বড় হতে থাকে। অবশেষে ২৩ সেপ্টেম্বর সূর্য আবার অবস্থান নেয় বিষুব বৃত্তের বিন্দুতে, যেখানে ক্রান্তি বৃত্ত বিষুব বৃত্ত পরস্পরকে ছেদ করেছে। একে বলা হয় জলবিষুব বিন্দু।
এই দিন পুনরায় পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান হয়ে থাকে। আবার এর পর থেকেই উত্তর গোলার্ধে ক্রমশ রাত বড় হতে হতে সূর্য পৌঁছে যায় ক্রান্তি বৃত্তের দক্ষিণ অয়নায়ন বিন্দুতে।
এভাবে ২১ ডিসেম্বর অথবা ২২ ডিসেম্বর তারিখে উত্তর গোলার্ধে হয় দীর্ঘতম রজনী আর ক্ষুদ্রতম দিবস। সময় সূর্য মকর বৃত্তে অবস্থান করে থাকে।

Monday, 23 September 2019

  আজ “শারদ বিষুব” পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান ।

আজ “শারদ বিষুব” পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান ।




ক্যালেন্ডারের দিকে তাকিয়ে দেখুন তো আজকের তারিখটি কি? সোমবার ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৩। আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ একটি দিনের কিন্তু রয়েছে বিশাল একটি তাৎপর্য। আজকের দিনটি হলো উত্তর গোলার্ধেশারদ বিষুবআর দক্ষিণ গোলার্ধেবাসন্ত বিষুব”, অর্থাৎ আজ দিন এবং রাতের দৈর্ঘ্য সমান সমান, ১২ ঘণ্টা করে।
শারদ বিষুবশব্দটির ইংরেজি হল “Autumnal Equinox” Equionx শব্দটি এসেছে ল্যাটিন ভাষা থেকে যার অর্থ হলসমান রাত্রি পৃথিবী সারা বছর তার অক্ষের ওপর একটু কাত হয়ে ঘুরতে থাকে। এর ফলে সূর্যের আলো সমানভাবে বণ্টন হয় না এবং দেখা যায় দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্যে তারতম্য এবং ঋতুবৈচিত্র্য। কিন্তু বছরে এমন দুইটি দিন আসে যখন পৃথিবী তার অক্ষের ওপরে একেবারে সোজা হয়ে যায়। এমন অবস্থায় বিষুবরেখার ওপরে লম্বভাবে সূর্যরশ্মি এসে পড়ে এবং দিন-রাত্রির দৈর্ঘ্য সমান হয়। এই দিনে সূর্য আকাশের ঠিক পূর্ব থেকে ওঠে এবং ঠিক পশ্চিম বরাবর অস্ত যায়। বছরের অন্য সময়ে তার একটু হলেও তারতম্য হয়। এই দুইটি দিন হল সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখ এবং মার্চের ২০ তারিখ। সেপ্টেম্বরের ২৩ তারিখ উত্তর গোলার্ধে শারদ বিষুব এবং দক্ষিণ গোলার্ধে বাসন্ত বিষুব। আবার মার্চের ২০ তারিখ হল উত্তর গোলার্ধে বাসন্ত বিষুব এবং দক্ষিণ গোলার্ধে শারদ বিষুব। শারদ বিষুবের পর থেকে দিনের দৈর্ঘ্য কমে গিয়ে রাতের দৈর্ঘ্য বৃদ্ধি পেতে থাকে।

ঠিক ২৩ তারিখেই যে শারদ বিষুব সংগঠিত হবে তা কিন্তু নির্দিষ্ট নয়। সারা বিশ্বে ২৩ তারিখ ধরা হলেও এটি ২২, ২৩ এমনকি ২৪ তারিখেও সঙ্ঘটিত হতে পারে। এর কারণ হল প্রতি বছরই সূর্যের অবস্থানের একটু তারতম্য হয় এবং এই সময়টি এদিক ওদিক হয়ে যেতে পারে। শরতের শেষ দিনটি হলো শারদ বিষুব। এর পর হেমন্ত আসে এবং একটু একটু করে শীত পড়তে থাকে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিতে এর রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। •- ফ্রেঞ্চ রিপাবলিকান ক্যালেন্ডারে এটি ছিল প্রথম দিন। •- জাপানে এই দিনটিকে বলা হয়শুবুন নো হিএবং এটি একটি জাতীয় ছুটির দিন। •- গ্রীক মিথলজি অনুযায়ী এটি হলো সেই দিন যখন দেবী পার্সিফোনি পৃথিবীর উপরিভাগ থেকে ফেরত যায় পাতালপুরিতে, তার স্বামী হেডিস এর কাছে। সময়ে তারা নিরাপত্তা এবং গতবছরের সাফল্য এবং ব্যর্থতা নিয়ে প্রার্থনা করত।

শারদ বিষুবের সময়ে চীনে মধ্য-শরৎ উৎসব বা চাঁদ উৎসব সংগঠিত হয়। গ্রীষ্মের ফসল হলো এই উৎসবের মূল কারণ এবং এর একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল মুন কেক বা চাঁদের পিঠা। শুধু পৃথিবী নয়, অন্যান্য গ্রহেও শারদ এবং বাসন্ত বিষুব দেখা যায়। তবে অন্য গ্রহে যেহেতু প্রাণ নেই তাই ঋতুগুলোকে অত আলাদা করে বোঝা যায় না। নিজের অক্ষের ওপর কাত হয় ঘুরছে এমন যে কোনও গ্রহেই বিষুব সঙ্ঘটিত হয়। সবচাইতে দর্শনীয় বিষুব হলো শনি গ্রহের বিষুব। সময়ে শনির বলয় প্রায় অদৃশ্য হয়ে যায়।

প্রতি বছর অর্থাৎ ৩৬৫ দিনের মধ্যে দুটি দিন পৃথিবীর দিন রাতের ব্যাপ্তি সমান হয়ে থাকে। এর একটি দিন হলো ২১ মার্চ এবং অন্যটি ২৩ সেপ্টেম্বর। আজ ২৩ সেপ্টেম্বর সূর্য উত্তর আর দক্ষিণ অয়নান্তের মাঝামাঝি ঠিক বিষুব রেখা বরাবর কিরণ দেবে। সেই হিসেবে আজ পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত সমান। 
আগামীকাল থেকেই সূর্যের চারদিকে আপন কক্ষপথে পৃথিবীর পরিক্রমণের কারণে সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধের দিকে সরে যেতে শুরু করবে। আবহাওয়াও উত্তরা বাতাসে শীত থেকে শীতার্ত হবে। ধীরে ধীরে দীর্ঘ হতে পরবর্তী রাতগুলো। 
এরপর ২০ মার্চ সূর্য তার দক্ষিণ গোলার্ধের অবস্থান শেষ করে উত্তর গোলার্ধের দিকে যাত্রাকালে রাতের শেষের দিকে বিষুবরেখার উপর অবস্থান নেয়। তাই পরদিন অর্থাৎ ২১ মার্চ পৃথিবীর উভয় গোলার্ধের দিন রাতের দৈর্ঘ্য সমান হয়।