Saturday, 20 June 2020

২১ জুন ২০২০ তারিখ সূর্যগ্রহণ এবং উত্তর অয়ণান্ত দিবস


আলহামদুলিল্লাহ । আগামী কাল ২১ জুন ২০২০ তারিখ সূর্যগ্রহণ এবং উত্তর অয়ণান্ত দিবস  অনুষ্ঠিত হবে । এটি  জ্যোতির্বিজ্ঞানে ব্যতিক্রমধর্মী ঘটনা বলে বিবেচিত হলেও  ইসলাম ধর্মে অগুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে বিবেচিত ।
২১ জুন, উত্তর গোলার্ধের সবচেয়ে বড় দিন। বছরের দীর্ঘতম দিনে বাংলাদেশের আকাশে সূর্য থাকবে মোট ১৩ ঘন্টা ৩৬ মিনিট এক সেকেন্ড।


আবার ২১ জুন ২০২০ বাংলাদেশ সময় বেলা ১১:২৩ মিনিট থেকে আংশিক সূর্যগ্রহন শুরু হবে। দুপুর :১২ মিনিটে গ্রহণ সর্বোচ্চ পর্যায়ে থাকবে, আর শেষ হবে দুপুর ০২:৫২ মিনিটে।
সূর্যগ্রহন উপভোগ করতে চাইলে ওই দিন নির্দেশিত সময়ে ভালো মানের সানগ্লাস বা সান ফিল্টার অথবা সোলারস্কোপ  ব্যবহার করে গ্রহণ দেখতে হবে। খালি চোখে সূর্যগ্রহণ দেখা চোখের জন্য ক্ষতিকর


জেনে রাখা ভাল :


২১ জুন হলো  হলো  উত্তরায়ন বা উত্তর অয়নান্ত  বা  সামার সলস্টিস ।

জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের কাছে এদিন গুরুত্বপূর্ণ । কারণ এটি জ্যোতির্বিদ্যার গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।

দিবা-রাত্রির দৈর্ঘ্য হ্রাস-বৃদ্ধির উপর নির্ভর করে চারটি দিন গুরুত্বপূর্ণ । এসব দিন নিয়ে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো :
হিসাবের সুবিধার্থে সূর্যকে পরিক্রমণকালে কক্ষপথে পৃথিবীর চারটি অবস্থান নির্দিষ্ট করা হয়েছে। যথা : ২১শে জুন, ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২২শে ডিসেম্বর ২১শে মার্চ।



২১শে জুন : সূর্যকে পরিক্রমণকালে ২১শে জুন পৃথিবী এমন অবস্থানে পৌঁছে, যেখানে উত্তর মেরু সূর্যের দিকে ২৩.° ঝুঁকে থাকে এবং দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে দূরে সরে পড়ে। এদিন ২৩.° উত্তর অক্ষাংশে অর্থাৎ কর্কটক্রান্তির উপর সূর্যকিরণ ৯০° কোণে বা লম্বভাবে পড়ে। ফলে এইদিন উত্তর গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় এবং রাত সবচেয়ে ছোট হয়। আর দক্ষিণ গোলার্ধে রাত সবচেয়ে বড় এবং দিন সবচেয়ে ছোট হয়।
২৩শে সেপ্টেম্বর : ২১শে জুনের পর উত্তর মেরু সূর্য থেকে দূরে সরতে থাকে এবং দক্ষিণ মেরু নিকটে আসতে থাকে। ফলে উত্তর গোলার্ধে ক্রমশঃ দিন ছোট রাত বড় তে থাকে এবং দক্ষিণ গোলার্ধে দিন বড় রাত ছোট থাকে। এভাবে ২৩শে সেপ্টেম্বর পৃথিবী এমন এক অবস্থানে আসে, যখন উভয় মেরু সূর্য থেকে সমান দূরে থাকে। এইদিন সূর্যরশ্মি নিরক্ষরেখায় ৯০° কোণে এবং মেরুদ্বয়ে ° কোণে আপতিত হয়। ফলে এই তারিখে পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রি সমান হয়।
২২শে ডিসেম্বর : ২৩শে সেপ্টেম্বরের পর উত্তর মেরু সূর্য থেকে আরও দূরে সরতে থাকে এবং দক্ষিণ মেরু অপেক্ষাকৃত সূর্যের কাছে সরে আসে। ফলে উত্তর গোলার্ধে দিন ছোট তে থাকে এবং রাত বড় তে থাকে। এভাবে ২২শে ডিসেম্বর এমন অবস্থানে পৌঁছায় যখন দক্ষিণ মেরু সূর্যের দিকে সর্বাধিক (২৩.° কোণে) হেলে থাকে। এইদিন সূর্যকিরণ ২৩.° দক্ষিণ অক্ষাংশে লম্বভাবে বা ৯০° কোণে আপতিত হয়। ফলে এইদিন দক্ষিণ গোলার্ধে দিন সবচেয়ে বড় হয় এবং রাত সবচেয়ে ছোট হয়। একই সাথে উত্তর গোলার্ধে দিন ছোট রাত বড় হয়।
২১শে মার্চ : পৃথিবী তার নিজ কক্ষপথে আবর্তন কালে ২২শে ডিসেম্বরের পর উত্তর মেরু ক্রমশঃ সূর্যের নিকটে আসে এবং দক্ষিণ মেরু সরে যেতে থাকে। এতে উত্তর গোলার্ধে দিন বড় রাত ছোট হতে থাকে। অবশেষে ২১শে মার্চ পৃথিবী এমন অবস্থানে আসে যখন উত্তর মেরু দক্ষিণ মেরু সূর্য থেকে সমান দূরত্বে থাকে। ফলে এইদিনও ২৩শে সেপ্টেম্বরের মত পৃথিবীর সর্বত্র দিন-রাত্রি সমান হয়।

উপসংহার : জ্যোতির্বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃত্ত অনেক বিষয়ই ইসলাম ধর্মের সাথে সম্পৃত্ত নেই । যেমন : অমুক তারিখের পর বা সূর্যগ্রহণ হলে রোগ শোক বিলীন হওয়ার বিশ্বাস ইসলাম ধর্মে অবিশ্বাস বা কুফরী কাজ বা শিরক বা সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর সাথে অংশীদার স্হাপন করার গুনাহ তুল্য কাজ । সুতরাং জ্যোতির্বিজ্ঞানের সাথে সম্পৃত্ত বিষয়ের সাথে ইসলাম ধর্মের সম্পৃত্ততা নেই ।
আর কোন জ্যোতির্বিজ্ঞানী বা বিজ্ঞানীও বলতে পারেন না, সূর্যগ্রহণ বা অমুক ঘটনার পর রোগ-ব্যাধি চলে যাবে । কারণ এধরনের কথা চরমবিজ্ঞানবিরোধী কথা ।



শেয়ার করুন

0 comments: